কবিতার ভাব ও আমার ভাবনা
ভাবনা যখন ভাবে রূপ নেয়, তখন তার শব্দ গাঁথায় সৃষ্টি হয় এক একটি কবিতা। তার মানে কবিতা ভাবের উপর রচিত। এই ভাব হতে পারে কবির নিজস্ব মননে গড়া, ঠিক তখন কবিতা সত্যিকারের কবিতা হয়ে ওঠে। আবার কখনোবা পাঠকের মনোরঞ্জনের জন্য জোর করে সৃষ্টি করা হয় ভাব। আর এই ভাব তখন শব্দ বিচারে ঠিক হলেও তা পাঠককে কতটা মনোরঞ্জন দিতে পারবে তা প্রশ্নবিদ্ধ। কেননা জোরপূর্বক সৃষ্ট ভাবের ওই কবিতায় কবি নিজেই আনন্দের উপকরণ খুঁজে পান না।
কবিতা অনেকটা গানের মতো পাঠকের মনকে আলোড়িত করতে পারে। তবে গায়কের কন্ঠ ও সুরের মূর্ছনায় এক একটি গানের কথা জীবন্ত হয়ে ওঠে শ্রোতাদের কাছে। ঠিক বিপরীতে যে কবিতায় ছন্দ মিলিয়ে পড়া যায় সেটা সহজেই পাঠকের মন জয় করতে পারে। আর ছন্দের প্রাধান্য যে কবিতায় কম সেটা আবৃত্তি শিল্পী তার শিল্পগুণ দিয়ে পাঠ করলেই শ্রোতার কাছে সে কবিতা ভাবগুণের বিচারে মর্যাদা পায়। আর প্রবন্ধ তো মূলত কোনো একটা বিষয়ের উপর লেখকের ভাবনা কি, তাই। আর থাকে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ ও উদ্ধৃতি।
কবিরা যা বলে তা তারা করে না- এটা কথাই সত্য হয়। এ কারণে কবিদের সত্য ও সুুন্দর কথাই লেখা উচিত যা তারা করে। শুধু ছন্দ ও ভাবের স্বার্থে একটা চরণ লিখলেই হবে না। নিজের পরিবেশ পরিস্থিতি ও জীবনের সাথে কতোটুকু মিল আছে তা ভেবেই কাব্য গাঁথার দিকে এগুতে হবে। তা না হলে এই কবিতাগুলো কালজয়ী হতে পারবে না।
কিছু কিছু কবিতায় বাস্তব কথা উঠে আসে। আসলে কবিতায় অনেক কথাই আছে যা কল্পনাশ্রিত। পাঠককে বোকা বানাতে অনেক কথা কবিতায় তুলে ধরা হয়। ভাব দিয়ে আবেগ দিয়ে ছন্দ দিয়ে পাঠককে মুগ্ধ করা হয়। কিন্তুুু অবাস্তব কথাকাব্যে পাঠক মুুুগ্ধ হলেও ওই কবিতা পাঠে তার বাস্তব জীবনে কি লাভ, সেটা ভাববার বিষয়। আর বাস্তবতা বিবর্জিত সব কবিতার রচনা কবির যোগ্যতা হলেও তা পাঠককে কিছু দিতে পারেনা। আর এ প্রশ্নেই কোনো কোনো কবির কাব্য গাঁথার ব্যর্থতা নিহিত।
শব্দের ছন্দ বা কবির আবেগ থাকে কবিতায়। আর এই ছন্দ আবেগকে আশ্রয় করে পাঠকের মনে চেতনার সৃষ্টি করে। আর সে চেতনা যদি জীবন-যৌবন, প্রেম-ভালোবাসা, সুখ-দুঃখ ও পাওয়া- না পাওয়ার সাথে পাঠককে সংযুক্ত করে তাহলে সে কবিতা পাঠকের মনে জায়গা করে নিতে দেরি করে না। আর তাই তো বেশিরভাগ কবিতা হয় এমনই সব অনুভূতির ধারক, আর কবি হয় সেই চেতনার এক শৈল্পিক বাহক।
কারো জীবনে যদি প্রেম ভালোবাসা, সুখ, দুঃখ যা আছে তা সবই বাস্তবে ধরা দেয়, তাহলে কল্পনার আশ্রয়ে তাদের তা খুঁজতে হয় না। আর এমন লোকরাই হয়তো শুধুু কবিতা পছন্দ করেন না। আর বাকি সকলেই কমবেশি কবিতা পছন্দ করেন। তাইতো কবিতা বহুলোকের জীবনের প্রতিনিধিত্ব করে। আর সেই জীবন ভাবনার কারিগর হিসেবে কবিদের অবদান অগ্রগণ্য। তাই তো কবিতার ভাব ও কবির ভাবনা এ দুয়ে মিলে যুগে যুগে সৃষ্টি হয়েছে কতো কালজয়ী কাব্য।
ঘোষণা: এই ওয়েবসাইটে (Bangla Articles) প্রকাশিত সকল লেখনি লেখক ও ওয়েব এডমিন মুহাম্মাদ আল-আমিন খান কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। Bangla Articles এর কোনো লেখনি থেকে সম্পূর্ণ অথবা আংশিক কপি করে সোশ্যাল মিডিয়া ও অন্য কোনো ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা যাবে না। কোনো লেখনি ভালো লাগলে ও প্রয়োজনীয় মনে হলে এই ওয়েবসাইট থেকেই তা পড়তে পারেন অথবা ওয়েব লিংক শেয়ার করতে পারেন। গুগল সার্চ থেকে দেখা গেছে যে- বহু লেখনি কতিপয় দুষ্কৃতিকারী নিজের নামে চালিয়ে দিয়েছেন, যা সম্পূর্ণরূপে কপিরাইট আইনের লঙ্ঘন। ভবিষ্যতে আবারও এমনটি হলে প্রথমত গুগলের কাছে রিপোর্ট করা হবে ও দ্বিতীয়ত তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই কপিরাইট আইনের আওতায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই সাথে সকলের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে- Bangla Articles এ প্রকাশিত কোনো লেখনি আপনার ভালো না-ও লাগতে পারে, প্রয়োজনে আপনি এর সমালোচনা কমেন্টের মাধ্যমে করতে পারেন। বাক স্বাধীনতা, চিন্তার বহিঃপ্রকাশ করার অধিকার ও লেখালেখি করার অভ্যাসের জায়গা থেকে লেখক যা ইচ্ছা তাই লিখতে পারেন। তবে তিনি তার যেকোনো লেখনির ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন যাতে করে শালীনতা বজায় রাখা যায় এবং অন্যের ধর্মীয় অনুভূতি, মূল্যবোধ ও অধিকারের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা যায়। - মুহাম্মাদ আল-আমিন খান, লেখক ও ওয়েব এডমিন, Bangla Articles