পথের ধুলিকণাকেও শত্রু ভেবো: কিছুই বন্ধু নয়, কেউ-ই বন্ধু নয়, সব-ই শত্রু। চলার পথের ধুলিকণাও পায়ের শত্রু। নিজের হাত দুটোও দেহের শত্রু। পায়ে ক্ষত থাকলে আমরা ধুলিকণা থেকে ক্ষতস্থানকে বাঁচাতে চেষ্টা করি, তা না হলে ক্ষতস্থানে জীবাণুর সংক্রমণ হতে পারে। কিন্তু ক্ষত না থাকলে শত্রু ধুলিকণাকে শত্রু ভাবি না, এখানেই আমরা ভুল করি। নিজের হাত দুটো দিয়েই যখন মাদক সেবন করে লোকেরা, তখন তার ঐ হাত দুটোই কি তার শত্রু নয়? তাই বলি কি- হে মানুষ, শত্রু চিনতে ভুল করো না। তোমার হাত যেমন তোমার শত্রু, তোমার বন্ধুও তোমার শত্রু। তোমার যে চুল পরিমাণ ক্ষতি করতে পারে, সে তোমার পাহাড় পরিমাণও ক্ষতি করতে পারে। তোমার যে শত্রু, তাকে সব সময় তোমার ভবিষ্যৎ খুনি-ই ভেবো। শত্রুকে বড় পিঁড়িতে বসতে দিয়েও লাভ নেই, যদিও শত্রুকে দমিয়ে রাখতে অনেকে এ পরামর্শ দিয়ে থাকে। শত্রু একটা বিষধর সর্পের ন্যায়, তার চলার পথে লাল গালিচা বিছিয়ে দিলেও সে তোমাকে দংশন করতেই লাল গালিচা বেয়ে এগিয়ে আসবে। তাই শত্রুর হাত থেকে বাঁচা বড় কঠিন। তাই বলি কি- পথের ধুলিকণাকে শত্রু ভেবো, আবার নিজের হাতকেও শত্রু ভেবো, বন্ধুকেও ভেবো। যা হোক সবাই মনে রাখুন- শুধু শত্রু আর শত্রু, আছে চারপাশে। অনেক সময় শত্রুও ছলনায় ভালোবাসে। হাসি মাখা ভালো কথা, তবু ভালো নয়। শত্রুর এ অভিনয়ে হতে হবে ক্ষয়।
কোনো কালে বন্ধু ছিলো না, অথচ আজ শত্রু হয়েছে, এমনটি খুব একটা ঘটে না। তার মানে আজ যে তোমার বন্ধু, কাল সে-ই তোমার শত্রু হবে। তবুও সকল শত্রুকে আমাদের ভালোবাসতে হবে। কিন্তু কিভাবে? নির্দিষ্ট কাউকে বন্ধু করো না, হাতে গোনা দশজনকেও বন্ধু করো না। যদি চাও সমাজের সকলেই যেনো তোমার কাছ থেকে ভালো ব্যবহার পায়। তাহলেই তুমিও সকলের থেকে ভালো ব্যবহার পাবার আশা করতে পারো। তবে হাতে গুণে কয়েকজনকে বন্ধ করে তার দুঃখে ও সুখে পাশে থাকলেই নিশ্চিত জেনে রেখো এরাই তোমার জীবননাশ করবে। শত্রুর জন্ম হয় বন্ধুত্ব থেকে। এমনকি নিজের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে মা ছাড়া আর সকলেও শত্রু হতে দেরি করবে না। তাই পরিবারের সদস্যদের সাথেও সতর্কতার সাথে থাকা উচিত। আবার মা ও বাবার দিক দিয়ে যারা আত্মীয়, নিজের ও ভাই-বোনের বৈবাহিক সম্পর্কের আত্মীয়, নিজের বৈবাহিক স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, সহপাঠী, সহকর্মী, সমাজের সদস্য ও চলার পথের পথিক- যে কেউ যে কোনো সময় শত্রু হয়ে যেতে পারে। এমনকি দাম্পত্য সঙ্গী ও সন্তান-সন্তুতির সাথেও সতর্কতার সাথে চলতে হবে। দুঃখের বিষয় এরাও শত্রু হতে অন্যদের তুলনায় কম সময় নেয়। তার মানে চারপাশে শত্রু ছাড়া আর কিছুই নেই, আর কেউ-ই নেই। তাই বলি কি- সাবধান! তবে আপন শত্রুর হাতে লাঞ্ছিত, বঞ্চিত ও আহত-নিহত হবার পরিসংখ্যান বলছে ঝুঁকির মধ্যে আপনিও। তা হলে তো আসলে করার কিছু থাকে না। অর্থাৎ এদেরকেও ভালোবাসতে হয় জীবনের ঝুঁকি নিয়েই।
দেখুন, সমাজ সংসারের কিছু লোককে সালাম দিলেও পেয়ে
বসে। কিছু লোকের দিকে তাকালেও পেয়ে বসে। কিছু
লোকের সামনে দিয়ে মুখ বুঝে হেঁটে গেলেও পেয়ে বসে। তখন
তারা নানান অযৌক্তিক চিন্তা করতে লাগবে আপনাকে নিয়ে, দেখবেন
আপনার গায়ে পড়ে আপনাকে জ্বালাতে থাকবে। তাই
করবেন কি- চলার পথেও এমন অভিনয় করতে শিখুন, যেনো
মনে হবে আপনি চারপাশের কাউকে দেখতেই পাননি। তবে
মনটাকে উদার করুন। মন
দিয়ে সকলকে ভালোবাসার চিন্তা করে রাখুন। সুযোগ
পেলে এসকল শত্রুকেও ভালো ব্যবহার দিবেন, তবে
পরিচয় গোপন রেখে। তা না হলে এরা বন্ধু হতে চাইবে। কারো
বন্ধু হওয়া ভালো নয়, আর
শত্রুর বন্ধু হওয়ার তো প্রশ্নই ওঠে না। হাসি মুখে মিষ্টি স্বরে অনেকে ভালো কথার
ফুলঝুরি নিয়ে আসে। সব
সময় মনে রাখতে হবে যে, এই
মিষ্টি কথার আড়ালে রয়েছে ছলনা। যে-ই
ভালো কিছু বলবে, আগে তা যাচাই করতে হবে বহুবার। কারো
ভালো কথায় সহজেই তার ফাঁদে পড়ে যাওয়া ঠিক হবে না। কেউ
প্রেমের অফার নিয়ে আসলে তাকে প্রথমেই ‘না’
বলে দিন। দ্বিতীয় বার আসলে গভীর ভাবে যাচাই বাছাই করা ছাড়া গ্রহণ করবেন না। মিষ্টি
লোক বেশি দুষ্ট থাকে। যারা
কর্কশ কথা বেশি বলে, দেখবেন
তাদের অনেকেই হতে পারে সত্যভাষী ও সৎ। অসৎ
লোকেরাই বেশি মিষ্টি কথা বলে। তাই
বলি কি, মা-বাবা ছাড়া আর সকলের মিষ্টি কথা যাচাই ছাড়া গ্রহণ করবেন না। মনে
রাখবেন- বড় শত্রুর প্রথম কথা বড় মিষ্টি হয়।
ঘোষণা: এই ওয়েবসাইটে (Bangla Articles) প্রকাশিত সকল লেখনি লেখক ও ওয়েব এডমিন মুহাম্মাদ আল-আমিন খান কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। Bangla Articles এর কোনো লেখনি থেকে সম্পূর্ণ অথবা আংশিক কপি করে সোশ্যাল মিডিয়া ও অন্য কোনো ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা যাবে না। কোনো লেখনি ভালো লাগলে ও প্রয়োজনীয় মনে হলে এই ওয়েবসাইট থেকেই তা পড়তে পারেন অথবা ওয়েব লিংক শেয়ার করতে পারেন। গুগল সার্চ থেকে দেখা গেছে যে- বহু লেখনি কতিপয় দুষ্কৃতিকারী নিজের নামে চালিয়ে দিয়েছেন, যা সম্পূর্ণরূপে কপিরাইট আইনের লঙ্ঘন। ভবিষ্যতে আবারও এমনটি হলে প্রথমত গুগলের কাছে রিপোর্ট করা হবে ও দ্বিতীয়ত তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই কপিরাইট আইনের আওতায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই সাথে সকলের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে- Bangla Articles এ প্রকাশিত কোনো লেখনি আপনার ভালো না-ও লাগতে পারে, প্রয়োজনে আপনি এর সমালোচনা কমেন্টের মাধ্যমে করতে পারেন। বাক স্বাধীনতা, চিন্তার বহিঃপ্রকাশ করার অধিকার ও লেখালেখি করার অভ্যাসের জায়গা থেকে লেখক যা ইচ্ছা তাই লিখতে পারেন। তবে তিনি তার যেকোনো লেখনির ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন যাতে করে শালীনতা বজায় রাখা যায় এবং অন্যের ধর্মীয় অনুভূতি, মূল্যবোধ ও অধিকারের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা যায়। - মুহাম্মাদ আল-আমিন খান, লেখক ও ওয়েব এডমিন, Bangla Articles