আঙ্গুরলতা যোগাযোগের কারণসমূহের ব্যাখ্যা।
আঙ্গুরলতা যোগাযোগ (Grapevine Communication) হলো একটি অপ্রাতিষ্ঠানিক বা অবাধ
যোগাযোগ ব্যবস্থা, যা কোনো নির্দিষ্ট দফতর বা কর্তৃপক্ষের
অনুমতি বা অনুমোদন ছাড়াই ঘটে। এটি মূলত কর্মীদের মধ্যে গুজব, তথ্য বা খবরের আদান-প্রদান ঘটে। এই যোগাযোগ পদ্ধতি আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ
ব্যবস্থার বাইরে ঘটে এবং এটি ব্যক্তিগত পর্যায়ে বা দলগতভাবে হতে পারে। আঙ্গুরলতা
যোগাযোগ সাধারণত অবাঞ্ছিত বা আংশিক সঠিক তথ্য বহন করতে পারে, কিন্তু এটি অনেক সময় কর্মীদের মধ্যে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
আঙ্গুরলতা যোগাযোগের কারণসমূহ:
- অপর্যাপ্ত আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ: যখন প্রতিষ্ঠানে আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ ব্যবস্থায় কোনো
সমস্যা বা ঘাটতি থাকে, তখন কর্মীরা তাদের চিন্তা বা খবর
আঙ্গুরলতার মাধ্যমে আদান-প্রদান করে। উদাহরণস্বরূপ, যদি
কোনো প্রতিষ্ঠান নতুন পরিকল্পনা বা পরিবর্তন সম্পর্কে কর্মীদের অবহিত না করে,
তখন কর্মীরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা শুরু করে, যার মাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে পড়ে।
- আগ্রহের বিষয় বা সাসপেন্স: যদি কোনো বিষয়ে খুব বেশি আগ্রহ বা উত্তেজনা থাকে,
যেমন প্রতিষ্ঠানের রূপান্তর, চাকরি
সংক্রান্ত কোনো পরিবর্তন বা উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা পরিবর্তন, তবে কর্মীরা সেই বিষয়ে আলোচনা করতে বেশি আগ্রহী হন এবং এ থেকেই
আঙ্গুরলতা যোগাযোগের সূচনা হয়।
- অবিশ্বাস এবং সন্দেহ: কর্মীরা যখন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত বা নীতি নিয়ে
সন্দিহান বা অবিশ্বাসী হন, তখন তারা নিজেদের মধ্যে কথা
বলার মাধ্যমে সঠিক তথ্য পাওয়ার চেষ্টা করে। উদাহরণস্বরূপ, যদি কোনো প্রতিষ্ঠান সংকটের মধ্যে থাকে এবং কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা
পরিষ্কার না হয়, তাহলে কর্মীরা গুজব ছড়াতে শুরু করতে
পারে।
- মানবিক প্রবৃত্তি: মানুষ সাধারণত অন্যদের সম্পর্কে জানতে বা আলোচনা করতে আগ্রহী থাকে,
বিশেষ করে যখন সেই তথ্য কোনো উত্তেজনা বা সন্দেহ সৃষ্টি করে। এ
কারণে আঙ্গুরলতা যোগাযোগ ঘটে, বিশেষ করে কর্মীদের মধ্যে
যা তাদের কাছে মজাদার বা আকর্ষণীয় মনে হয়।
- দলের মধ্যে সম্পর্ক এবং বন্ধুত্ব: কর্মীদের মধ্যে যারা কাছাকাছি বন্ধু বা ভালো সম্পর্ক
গড়ে তোলে, তারা প্রায়ই একে অপরকে খবর দেয় বা গুজব
শেয়ার করে। এই ধরনের সম্পর্ক আঙ্গুরলতা যোগাযোগে সহায়ক হতে পারে, কারণ ব্যক্তিগত বন্ধুত্ব বা সম্পর্কের মাধ্যমে গুজব ছড়ানো সহজ হয়।
- অপর্যাপ্ত অফিসিয়াল তথ্য সরবরাহ: যদি প্রতিষ্ঠান কোনো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত বা ঘটনা
সম্পর্কে অফিসিয়াল তথ্য সরবরাহ না করে, তাহলে কর্মীরা
নিজেদের মধ্যে আলোচনা শুরু করে এবং তাদের কাছে থাকা অপ্রত্যাশিত বা অসম্পূর্ণ
তথ্য থেকে আঙ্গুরলতা যোগাযোগ জন্ম নেয়।
উপসংহার:
আঙ্গুরলতা যোগাযোগ কোনোরকম আনুষ্ঠানিক নিয়ন্ত্রণের বাইরে ঘটে, এবং এতে অল্প বা ভুল তথ্য ছড়ানোর সম্ভাবনা থাকে। যদিও এটি কখনো কখনো দ্রুত তথ্য বিতরণে সাহায্য করতে পারে, তবে এতে গুজব বা ভুল ধারণাও ছড়িয়ে পড়তে পারে। এ জন্য, প্রতিষ্ঠানে সঠিক এবং কার্যকর আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ ব্যবস্থা থাকতে হবে, যাতে আঙ্গুরলতা যোগাযোগের অবস্থা সীমিত থাকে এবং কর্মীরা সঠিক তথ্য পায়।
ঘোষণা: এই ওয়েবসাইটে (Bangla Articles) প্রকাশিত সকল লেখনি লেখক ও ওয়েব এডমিন মুহাম্মাদ আল-আমিন খান কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। Bangla Articles এর কোনো লেখনি থেকে সম্পূর্ণ অথবা আংশিক কপি করে সোশ্যাল মিডিয়া ও অন্য কোনো ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা যাবে না। কোনো লেখনি ভালো লাগলে ও প্রয়োজনীয় মনে হলে এই ওয়েবসাইট থেকেই তা পড়তে পারেন অথবা ওয়েব লিংক শেয়ার করতে পারেন। গুগল সার্চ থেকে দেখা গেছে যে- বহু লেখনি কতিপয় দুষ্কৃতিকারী নিজের নামে চালিয়ে দিয়েছেন, যা সম্পূর্ণরূপে কপিরাইট আইনের লঙ্ঘন। ভবিষ্যতে আবারও এমনটি হলে প্রথমত গুগলের কাছে রিপোর্ট করা হবে ও দ্বিতীয়ত তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই কপিরাইট আইনের আওতায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই সাথে সকলের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে- Bangla Articles এ প্রকাশিত কোনো লেখনি আপনার ভালো না-ও লাগতে পারে, প্রয়োজনে আপনি এর সমালোচনা কমেন্টের মাধ্যমে করতে পারেন। বাক স্বাধীনতা, চিন্তার বহিঃপ্রকাশ করার অধিকার ও লেখালেখি করার অভ্যাসের জায়গা থেকে লেখক যা ইচ্ছা তাই লিখতে পারেন। তবে তিনি তার যেকোনো লেখনির ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন যাতে করে শালীনতা বজায় রাখা যায় এবং অন্যের ধর্মীয় অনুভূতি, মূল্যবোধ ও অধিকারের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা যায়। - মুহাম্মাদ আল-আমিন খান, লেখক ও ওয়েব এডমিন, Bangla Articles