কিডনি নষ্ট হলে বাঁচার উপায়
কিডনি নষ্ট হয়ে গেলে বাঁচার জন্য কয়েকটি
গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা পদ্ধতি এবং জীবনযাত্রার পরিবর্তন থাকতে পারে, যা রোগীর শরীরকে সুস্থ রাখে এবং কিডনির কাজ বন্ধ
হয়ে গেলে তার ক্ষতিপূরণ দেয়। কিডনি যদি গুরুতরভাবে নষ্ট হয়ে যায়, তখন শরীরের অন্যান্য অংশে সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে, যেমন টক্সিন জমা হওয়া, তরল ভারসাম্য নষ্ট হওয়া, এবং বিদ্যুৎপ্রবাহে সমস্যা হওয়া। তবে, আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি এবং প্রযুক্তি কিডনি
রোগীকে দীর্ঘ জীবন দিতে সাহায্য করতে পারে।
কিডনি নষ্ট হলে বাঁচার
উপায়গুলো:
১. ডায়ালিসিস (Dialysis):
কিডনি সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেলে, শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ এবং অতিরিক্ত তরল বের
করতে ডায়ালিসিস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি কিডনির কাজের বিকল্প হিসাবে কাজ করে এবং
দুই ধরণের হয়:
- হেমোডায়ালিসিস (Hemodialysis): এই পদ্ধতিতে, রোগীর রক্ত একটি মেশিনের মাধ্যমে ফিল্টার করে শরীর
থেকে টক্সিন এবং অতিরিক্ত তরল বের করা হয়।
- পেরিটোনিয়াল ডায়ালিসিস (Peritoneal Dialysis): এই পদ্ধতিতে, পেটের মধ্যে একটি বিশেষ তরল ঢেলে দিয়ে, সেখানে থাকা রক্তনালী থেকে বর্জ্য পদার্থ
এবং অতিরিক্ত তরল শোষণ করা হয়।
২. কিডনি প্রতিস্থাপন (Kidney Transplantation):
কিডনি প্রতিস্থাপন একটি দীর্ঘমেয়াদি সমাধান হতে
পারে, যেখানে রোগীর নষ্ট কিডনির
স্থলে একটি সুস্থ কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়। এই পদ্ধতিতে সাধারণত মৃত বা জীবিত
ডোনারের কিডনি ব্যবহার করা হয়। কিডনি প্রতিস্থাপন সফল হলে, রোগী একাধিক বছর সুস্থভাবে বাঁচতে পারেন। তবে, এটি একটি জটিল প্রক্রিয়া এবং সফলতার জন্য সঠিক
প্রস্তুতি এবং নিয়মিত চিকিৎসা দরকার।
৩. ঔষধ এবং জীবনযাত্রার
পরিবর্তন:
কিডনি রোগে আক্রান্ত হলে, একাধিক ঔষধ ব্যবহার করা হতে পারে, যা কিডনির আরও ক্ষতি হতে রোধ করে এবং শরীরের
অন্যান্য অবস্থা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে:
- রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ: উচ্চ রক্তচাপ কিডনি
নষ্টের অন্যতম কারণ, তাই রক্তচাপ
নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
- এন্টি-ব্যাকটেরিয়াল ঔষধ: কিডনি ক্ষতির
জন্য ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন একটি কারণ হতে পারে। তাই ইনফেকশন রোধে প্রয়োজনীয়
ঔষধ গ্রহণ করতে হতে পারে।
- ডায়েট কন্ট্রোল: প্রোটিন, সোডিয়াম, পটাসিয়াম, ফসফেট ইত্যাদির
পরিমাণ কমিয়ে ডায়েট নিয়ন্ত্রণ করা।
৪. সঠিক পুষ্টি এবং
হাইড্রেশন:
কিডনি নষ্ট হলে শরীর থেকে অতিরিক্ত তরল ও টক্সিন
বের করার কাজ কঠিন হয়ে যায়, তাই সঠিক পরিমাণে
পানি এবং পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ। তবে, অতিরিক্ত পানি পানও কিডনির উপর চাপ ফেলতে পারে, সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পানি গ্রহণ করা উচিত।
৫. মেডিকেল চেকআপ এবং
মনিটরিং:
কিডনি রোগীকে নিয়মিত নেফ্রোলজিস্ট বা কিডনি
বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে এবং কিডনি কার্যক্রমের পরিস্থিতি মনিটর করতে হবে।
কিডনি ফাংশন পরীক্ষা, রক্ত পরীক্ষার
মাধ্যমে কিডনি পরিস্থিতি যাচাই করা হয়।
৬. মনোবল এবং মানসিক
স্বাস্থ্য:
কিডনি রোগের প্রভাব শুধু শারীরিক নয়, মানসিক স্বাস্থ্যের উপরও পড়তে পারে। ডায়ালিসিস বা
কিডনি প্রতিস্থাপনের মতো প্রক্রিয়ার জন্য দীর্ঘ সময় ধরে চিকিৎসা নিতে হয়, যা মানসিক চাপ সৃষ্টি করতে পারে। এই কারণে মনোবল
ধরে রাখা, পর্যাপ্ত বিশ্রাম, এবং মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা গুরুত্বপূর্ণ।
উপসংহার:
কিডনি নষ্ট হয়ে গেলে বাঁচার উপায়গুলো অত্যন্ত
আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি এবং নিয়মিত চিকিৎসার উপর নির্ভরশীল। ডায়ালিসিস এবং কিডনি
প্রতিস্থাপন জীবনের অবলম্বন হতে পারে, তবে শরীরের অবস্থা ও
রোগীর সুস্থতার ভিত্তিতে চিকিৎসক উপযুক্ত পরামর্শ দিতে পারেন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, কিডনি রোগের প্রাথমিক লক্ষণগুলোর প্রতি মনোযোগী
হয়ে যথাযথ চিকিৎসা গ্রহণ করা।
কিডনি ড্যামেজের লক্ষণ
সুস্থ কিডনির লক্ষণ
কিডনি রোগের কারণ লক্ষণ ও প্রতিকার
কিডনি রোগ কি ভাল হয়
কিডনি রোগের প্রাথমিক লক্ষণ
কিডনির সমস্যা হলে কোথায় কোথায় ব্যথা হয়
কিডনি ব্যথা বোঝার উপায়
কিডনি রোগের প্রতিকার
ঘোষণা: এই ওয়েবসাইটে (Bangla Articles) প্রকাশিত সকল লেখনি লেখক ও ওয়েব এডমিন মুহাম্মাদ আল-আমিন খান কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। Bangla Articles এর কোনো লেখনি থেকে সম্পূর্ণ অথবা আংশিক কপি করে সোশ্যাল মিডিয়া ও অন্য কোনো ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা যাবে না। কোনো লেখনি ভালো লাগলে ও প্রয়োজনীয় মনে হলে এই ওয়েবসাইট থেকেই তা পড়তে পারেন অথবা ওয়েব লিংক শেয়ার করতে পারেন। গুগল সার্চ থেকে দেখা গেছে যে- বহু লেখনি কতিপয় দুষ্কৃতিকারী নিজের নামে চালিয়ে দিয়েছেন, যা সম্পূর্ণরূপে কপিরাইট আইনের লঙ্ঘন। ভবিষ্যতে আবারও এমনটি হলে প্রথমত গুগলের কাছে রিপোর্ট করা হবে ও দ্বিতীয়ত তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই কপিরাইট আইনের আওতায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই সাথে সকলের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে- Bangla Articles এ প্রকাশিত কোনো লেখনি আপনার ভালো না-ও লাগতে পারে, প্রয়োজনে আপনি এর সমালোচনা কমেন্টের মাধ্যমে করতে পারেন। বাক স্বাধীনতা, চিন্তার বহিঃপ্রকাশ করার অধিকার ও লেখালেখি করার অভ্যাসের জায়গা থেকে লেখক যা ইচ্ছা তাই লিখতে পারেন। তবে তিনি তার যেকোনো লেখনির ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন যাতে করে শালীনতা বজায় রাখা যায় এবং অন্যের ধর্মীয় অনুভূতি, মূল্যবোধ ও অধিকারের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা যায়। - মুহাম্মাদ আল-আমিন খান, লেখক ও ওয়েব এডমিন, Bangla Articles