প্রতিবেদনের সংজ্ঞা ও প্রতিবেদনের উদ্দেশ্য লিখুন।
প্রতিবেদন (Report) – সংজ্ঞা:
প্রতিবেদন হলো একটি আনুষ্ঠানিক ও সুসংগঠিত লিখিত দলিল, যা নির্দিষ্ট
কোনো ঘটনা, কার্যক্রম, সমস্যা, গবেষণা বা পর্যবেক্ষণের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়। এতে নির্ভরযোগ্য
তথ্য, বিশ্লেষণ, পরিসংখ্যান, মতামত ও সুপারিশ অন্তর্ভুক্ত থাকে, যা সংশ্লিষ্ট
ব্যক্তি বা কর্তৃপক্ষকে সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা করে।
প্রতিবেদন লেখার প্রধান উদ্দেশ্য হলো কোনো বিষয়
সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সরবরাহ করা এবং তা বিশ্লেষণ করে সম্ভাব্য সমাধান বা
ভবিষ্যৎ করণীয় নির্দেশ করা। এটি সাধারণত সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা
প্রতিষ্ঠান, ব্যবসায়িক সংগঠন ও সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে বহুল
ব্যবহৃত হয়।
“প্রতিবেদন হলো এমন একটি লিখিত বিবরণ যা কোনো
ঘটনা, বিষয় বা সমস্যা সম্পর্কে সংগৃহীত তথ্য বিশ্লেষণ করে
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সামনে উপস্থাপন করা হয়, যাতে তারা
যথাযথ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারেন।”
প্রতিবেদনের উদ্দেশ্য: প্রতিবেদন লেখার পেছনে একাধিক
উদ্দেশ্য কাজ করে। নিচে প্রতিবেদন লেখার প্রধান উদ্দেশ্যসমূহ বিস্তারিতভাবে তুলে
ধরা হলো:
১. তথ্য সরবরাহ করা (Providing Information): প্রতিবেদন লেখার মূল
উদ্দেশ্য হলো নির্ভরযোগ্য ও বিশ্লেষণভিত্তিক তথ্য সরবরাহ করা। এতে এমন সব তথ্য
থাকে, যা পাঠক আগে জানতেন না কিংবা যা ভবিষ্যৎ সিদ্ধান্তের জন্য প্রয়োজন। উদাহরণ:
দুর্ঘটনার প্রতিবেদন, বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া
অনুষ্ঠানের প্রতিবেদন ইত্যাদি।
২. বিশ্লেষণ ও মূল্যায়ন করা
(Analyzing
and Evaluating): প্রতিবেদনের মাধ্যমে কোনো ঘটনা বা বিষয়ের কারণ, প্রভাব,
ও সংশ্লিষ্ট বিষয়সমূহ বিশ্লেষণ করে তার সঠিক মূল্যায়ন করা হয়। এর
ফলে প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে একটি স্বচ্ছ ধারণা পাওয়া যায়। উদাহরণ: একটি
স্কুলে শিক্ষার্থীদের ফলাফল নিয়ে বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদন।
৩. সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা
করা (Aiding
Decision-Making): কর্তৃপক্ষ বা সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী ব্যক্তি প্রতিবেদন পড়ে
বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে জানেন এবং সে অনুযায়ী উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
তাই প্রতিবেদন যে কোনো প্রশাসনিক বা নীতিগত সিদ্ধান্তের সহায়ক। উদাহরণ:
একটি অফিসে কর্মচারীর কাজের অগ্রগতি দেখে তাকে পদোন্নতি দেওয়ার আগে প্রতিবেদন
চাওয়া হয়।
৪. ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
নির্ধারণে সাহায্য করা (Planning for the Future): প্রতিবেদন ভবিষ্যৎ করণীয় ঠিক
করতে সাহায্য করে। পূর্বের অবস্থা বিশ্লেষণ করে ভবিষ্যৎ উন্নয়নের পরিকল্পনা নেওয়া
সহজ হয়। উদাহরণ: বাজার গবেষণার প্রতিবেদন দেখে কোম্পানি ভবিষ্যতে কোন পণ্য উৎপাদন
করবে, তা ঠিক করে।
৫. দলিল হিসেবে সংরক্ষণ করা (Documentation and Record
Keeping): প্রতিবেদন একটি লিখিত দলিল হিসেবে সংরক্ষণ করা যায়, যা ভবিষ্যতে
কোনো ঘটনা বা কার্যক্রম সম্পর্কে সাক্ষ্য বা রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে।
উদাহরণ: বিদ্যালয়ের বার্ষিক প্রতিবেদন, ব্যাংকের
বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন।
৬. দায়িত্ব ও জবাবদিহিতা
নিশ্চিত করা (Ensuring Accountability): প্রতিবেদনের মাধ্যমে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের কর্মকাণ্ড
পর্যালোচনা করা যায়, ফলে তাদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত হয়। এটি স্বচ্ছতা ও নৈতিকতা
বজায় রাখে। উদাহরণ: সরকারি প্রকল্পের অগ্রগতি প্রতিবেদন যা সংসদে উপস্থাপন
করা হয়।
৭. সাধারণ জনগণকে সচেতন করা (Raising Awareness): গণমাধ্যমে প্রকাশিত
প্রতিবেদনগুলো সমাজে সচেতনতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। বিশেষ করে স্বাস্থ্য, পরিবেশ,
শিক্ষা ইত্যাদি বিষয়ে লেখা প্রতিবেদন সাধারণ মানুষের মধ্যে জ্ঞান ও
আগ্রহ সৃষ্টি করে। উদাহরণ: বায়ু দূষণ বিষয়ে পত্রিকার একটি অনুসন্ধানমূলক
প্রতিবেদন।
উপসংহার: প্রতিবেদন একটি
তথ্যনির্ভর ও বিশ্লেষণধর্মী লেখা, যা যেকোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির
সিদ্ধান্ত গ্রহণ, পরিকল্পনা নির্ধারণ, এবং
কার্যকরী ব্যবস্থাপনার জন্য অপরিহার্য। সঠিকভাবে প্রস্তুতকৃত প্রতিবেদন যে কোনো
প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার কার্যক্রমকে গতি দেয় এবং ভবিষ্যৎ উন্নয়নের দিক নির্দেশনা
দেয়।
বিকল্প উত্তর:
প্রতিবেদনের সংজ্ঞা ও প্রতিবেদনের উদ্দেশ্য লিখুন।
প্রতিবেদন (Report) এর
সংজ্ঞা: প্রতিবেদন হলো একটি নির্দিষ্ট বিষয়, ঘটনা বা সমস্যার বিস্তারিত ও
সংগঠিত বিবরণ যা লিখিতভাবে কর্তৃপক্ষ বা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কাছে উপস্থাপন করা হয়,
যেন তারা সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারেন। এটি
বিশ্লেষণধর্মী, তথ্যনির্ভর এবং উদ্দেশ্যপূর্ণ লেখা, যা সাধারণত অনুসন্ধান, পর্যবেক্ষণ বা তদন্তের
মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে প্রস্তুত করা হয়।
"প্রতিবেদন হলো কোনো ঘটনা বা বিষয়ে
সংগৃহীত তথ্য, বিশ্লেষণ ও সুপারিশসহ একটি লিখিত বিবরণ যা
কর্তৃপক্ষকে সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করে।"
প্রতিবেদনের উদ্দেশ্য: প্রতিবেদন লেখার
বিভিন্ন উদ্দেশ্য থাকতে পারে। নিচে প্রধান কয়েকটি উদ্দেশ্য উল্লেখ করা হলো:
১. তথ্য সরবরাহ: প্রতিবেদনের মাধ্যমে
কোনো ঘটনা, সমস্যা বা কার্যক্রম সম্পর্কে নির্ভরযোগ্য ও বিশ্লেষণধর্মী তথ্য সংশ্লিষ্ট
ব্যক্তিকে জানানো হয়।
২. বিশ্লেষণ ও মূল্যায়ন: প্রতিবেদন ঘটনার কারণ, প্রভাব ও
সম্ভাব্য সমাধান বিশ্লেষণ করে সমস্যার বাস্তব চিত্র উপস্থাপন করে।
৩. সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা:
প্রতিবেদন
কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করে যাতে তারা সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে
পারেন।
৪. ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
নির্ধারণ: একটি ভালো প্রতিবেদন ভবিষ্যতের করণীয় সম্পর্কে ধারণা দেয় এবং সুনির্দিষ্ট
পদক্ষেপ গ্রহণে সহায়তা করে।
৫. দলিল হিসেবে সংরক্ষণ: প্রতিবেদন ভবিষ্যতে
রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করার জন্য সংরক্ষণযোগ্য দলিল হিসেবে কাজ করে।
উপসংহার: প্রতিবেদন একটি
তথ্যনির্ভর ও বিশ্লেষণধর্মী লেখা, যা যেকোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির
সিদ্ধান্ত গ্রহণ, পরিকল্পনা নির্ধারণ, এবং
কার্যকরী ব্যবস্থাপনার জন্য অপরিহার্য।
সার্চ কী: প্রতিবেদন কাকে বলে? প্রতিবেদনের সংজ্ঞা কি? প্রতিবেদন লেখার সংজ্ঞা কি? গবেষণা প্রতিবেদন কী? প্রতিবেদন রচনা,
প্রতিবেদন
কাকে বলে প্রতিবেদনের বৈশিষ্ট্য, প্রতিবেদনের প্রধান তিনটি
অংশ কী কী?, প্রতিবেদনের উদ্দেশ্য, প্রতিবেদন লেখার নিয়ম, প্রতিবেদন লিখন, তদন্ত প্রতিবেদন লেখার
নিয়ম, সাধারণ প্রতিবেদন লেখার নিয়ম, প্রতিবেদনের উদ্দেশ্য কী? প্রতিবেদনের উদ্দেশ্য কি কি? প্রতিবেদনের বৈশিষ্ট্য
কি কি? প্রতিবেদন পাঠের উদ্দেশ্য কি? প্রতিবেদনের বৈশিষ্ট্য, প্রতিবেদনের প্রধান তিনটি অংশ কী কী?
তদন্ত প্রতিবেদন
লেখার নিয়ম প্রতিবেদন কাকে বলে প্রতিবেদনের
বৈশিষ্ট্য, সাধারণ প্রতিবেদন লেখার নিয়ম, প্রতিবেদনের কয়টি অংশ ও কি কি, প্রতিবেদন রচনা,
প্রতিবেদনের
ভাষা কেমন হওয়া উচিত, প্রতিবেদনের দুটি বৈশিষ্ট্য
কী কী? প্রতিবেদনের উদ্দেশ্য কী? সংবাদ প্রতিবেদনের উদ্দেশ্য কি? প্রতিবেদনের ব্যবহার?
প্রতিবেদন
লিখন, প্রতিবেদন রচনা, প্রতিবেদন কি, প্রতিবেদন লেখার নিয়ম, প্রতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন, প্রতিবেদন লেখার নিয়ম pdf, প্রতিবেদন উদাহরণ, প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন
ঘোষণা: এই ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সকল লেখনি লেখক ও ওয়েব এডমিন মুহাম্মাদ আল-আমিন খান কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। Bangla Articles এর কোনো লেখনি থেকে সম্পূর্ণ অথবা আংশিক কপি করে সোশ্যাল মিডিয়া ও অন্য কোনো ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা যাবে না। কোনো লেখনি ভালো লাগলে ও প্রয়োজনীয় মনে হলে এই ওয়েবসাইট থেকেই তা পড়তে পারেন অথবা ওয়েব লিংক শেয়ার করতে পারেন। গুগল সার্চ থেকে দেখা গেছে যে- বহু লেখনি কতিপয় ব্যক্তি নিজের নামে চালিয়ে দিয়েছেন, যা সম্পূর্ণরূপে কপিরাইট আইনের লঙ্ঘন। ভবিষ্যতে আবারও এমনটি হলে প্রথমত গুগলের কাছে রিপোর্ট করা হবে ও দ্বিতীয়ত তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই কপিরাইট আইনের আওতায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই সাথে সকলের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে- Bangla Articles এ প্রকাশিত কোনো লেখনি আপনার ভালো না-ও লাগতে পারে, প্রয়োজনে আপনি এর সমালোচনা কমেন্টের মাধ্যমে করতে পারেন। বাক স্বাধীনতা, চিন্তার বহিঃপ্রকাশ করার অধিকার ও লেখালেখি করার অভ্যাসের জায়গা থেকে লেখক যা ইচ্ছা তাই লিখতে পারেন। তবে তিনি তার যেকোনো লেখনির ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন যাতে করে শালীনতা বজায় রাখা যায় এবং অন্যের ধর্মীয় অনুভূতি, মূল্যবোধ ও অধিকারের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা যায়। - মুহাম্মাদ আল-আমিন খান, লেখক ও ওয়েব এডমিন, Bangla Articles